Skip to main content
Source
Channel24
Author
শুভজিৎ পুততুন্ড
Date
City
কলকাতা

ভারতের ২৭টি রাজ্য, তিনটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পরিষদ মিলিয়ে আছে প্রায় ৬৪৩ জন মন্ত্রী। এর মধ্যে ৩০২ জন মন্ত্রীর বিরুদ্ধেই রয়েছে খুন, অপহরণ এবং নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধের মতো গুরুতর অভিযোগের ফৌজদারি মামলা। সংখ্যা নিরিখে প্রায় যা প্রায় ৪৭ শতাংশ! সম্প্রতি এমন তথ্য প্রকাশ করেছে নির্বাচনী নজরদারি সংস্থা 'অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস' (এডিআর)।  

এডিআর'এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ৩০২ জন মন্ত্রীর মধ্যে ১৭৪ জনের বিরুদ্ধে গুরুতর ফৌজদারি মামলা রয়েছে। রিপোর্ট অনুসারে, ৩৩৬ জন বিজেপি মন্ত্রীর মধ্যে ১৩৬ জনের (৪০ শতাংশ) বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে এবং ৮৮ জনের (২৬ শতাংশ) বিরুদ্ধে রয়েছে গুরুতর অভিযোগ। 

দেশটির চারটি রাজ্যে ক্ষমতায় থাকা কংগ্রেসের ৪৫ জন মন্ত্রীর (৭৪ শতাংশ) বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে, যার মধ্যে ১৮ জন (৩০ শতাংশ) গুরুতর অপরাধের মামলা রয়েছে।

'দ্রাবিড়া মুনেত্রা কাজাঘাম' (ডিএমকে) ৩১ জন মন্ত্রীর মধ্যে ২৭ জনের (৮৭ শতাংশ)  বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ রয়েছে, যেখানে ১৪ জন (৪৫ শতাংশ) গুরুতর মামলায় অভিযুক্ত। 

তৃণমূল কংগ্রেসের ৪০ জন মন্ত্রীর মধ্যে ১৩ জনের (৩৩ শতাংশ) বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে, যার মধ্যে ৮ জন (২০ শতাংশ) গুরুতর অভিযোগের মুখোমুখি।

আপ মন্ত্রীদের মধ্যে, ১৬ জনের মধ্যে ১১ জন (৬৯ শতাংশ) ফৌজদারি মামলা রয়েছে, যেখানে ৫ জন (৩১ শতাংশ) গুরুতর অপরাধের মুখোমুখি।এক্ষেত্রে তেলুগু দেশম পার্টির অনুপাত সবচেয়ে বেশি, তাদের ২৩ জন মন্ত্রীর মধ্যে ২২ জন (৯৬ শতাংশ) ফৌজদারি মামলা রয়েছে এবং ১৩ জন (৫৭ শতাংশ) গুরুতর অপরাধের মামলা রয়েছে। 

জাতীয় পর্যায়ে, ৭২ জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর হলফনামা অনুযায়ী ২৯ জন (৪০ শতাংশ) ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত। রাজ্যগুলির মধ্যে ১১টিতে- অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, বিহার, ওড়িশা, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, পাঞ্জাব, তেলেঙ্গানা, হিমাচল প্রদেশ, দিল্লি এবং পুদুচেরিতে - ৬০ শতাংশেরও বেশি মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে।

তবে, হরিয়ানা, জম্মু ও কাশ্মীর, নাগাল্যান্ড এবং উত্তরাখণ্ডের মন্ত্রীরা নিজেদের বিরুদ্ধে কোনও ফৌজদারি মামলার কথা হলফনামায় উল্লেখ করেননি।মন্ত্রীদের অপসারণের লক্ষ্যে সম্প্রতি নতুন বিল এনেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। প্রস্তাবিত বিধান অনুসারে, প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী সহ যেকোনো মন্ত্রী যদি পাঁচ বছর বা তার বেশি কারাদণ্ডের শাস্তিযোগ্য অপরাধের জন্য টানা ৩০ দিন ধরে গ্রেপ্তার এবং আটক থাকেন, তাহলে তাকে পদ থেকে অপসারণ করা হবে। ওই বিল উত্থাপনের কয়েকদিন পর এডিআর'এর এই প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হল। এডিআর রিপোর্টে মন্ত্রীদের আর্থিক সম্পদের বিশ্লেষণও তুলে ধরা হয়েছে। 

ওই রিপোর্ট মতে, ৬৪৩ জন মন্ত্রীর সম্মিলিত সম্পদের পরিমাণ ২৩,৯২৯ কোটি রুপি। অর্থাৎ মন্ত্রীদের গড় সম্পদের পরিমাণ ৩৭.২১ কোটি রুপি।৩০টি রাজ্যের মধ্যে ১১ টিতে বিলিয়নেয়ার (নূন্যতম একশত কোটি রুপির মালিক) মন্ত্রী রয়েছেন। কর্ণাটকে সর্বোচ্চ ৮ জন বিলিয়নেয়ার মন্ত্রী রয়েছেন, এরপর অন্ধ্রপ্রদেশে ৬ জন এবং মহারাষ্ট্রে ৪ জন বিলিয়নেয়ার মন্ত্রী রয়েছেন। অরুণাচল প্রদেশ, দিল্লি, হরিয়ানা এবং তেলেঙ্গানায় ২ জন করে বিলিয়নেয়ার মন্ত্রী আছেন, যেখানে গুজরাট, হিমাচল প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ এবং পাঞ্জাবে ১ জন করে বিলিয়নেয়ার মন্ত্রী রয়েছেন, যারা একশত কোটি রুপি বা তার বেশি অর্থের মালিক। 

রিপোর্টে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারের ৭২ জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর মধ্যে ৬ জন (৮ শতাংশ) বিলিয়নেয়ার। দলগতভাবে, বিজেপির বিলিয়নেয়ার মন্ত্রীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, সংখ্যাটা ১৪ জন। যদিও এটি তাদের মোট মন্ত্রীর মাত্র ৪ শতাংশ। কংগ্রেস দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে, তাদের ৬১ জন মন্ত্রীর মধ্যে ১১ জন (১৮ শতাংশ) বিলিয়নেয়ার। টিডিপির ২৩ জন মন্ত্রীর মধ্যে ৬ জন (২৬ শতাংশ) বিলিয়নেয়ার। এর পাশাপাশি আম আদমি পার্টি, জনসেনা পার্টি, জেডি(এস), এনসিপি এবং শিবসেনারও বিলিয়নেয়ার মন্ত্রী রয়েছে।

দেশের সবচেয়ে বিত্তবান মন্ত্রী হলেন টিডিপির ডঃ চন্দ্র শেখর পেম্মাসানি, যিনি ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে অন্ধ্রপ্রদেশের গুন্টুর কেন্দ্রের প্রতিনিধিত্ব করেন। হলফনামা অনুযায়ী তার সম্পদের পরিমাণ ৫,৭০৫ কোটি রুপিরও বেশি। এর পরেই রয়েছেন কর্ণাটকের কংগ্রেস নেতা এবং রাজ্যের মন্ত্রী ডি কে শিবকুমার, যার সম্পদের পরিমাণ ১,৪১৩ কোটি রুপিরও বেশি। অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ও টিডিপি দলের প্রধান এন চন্দ্রবাবু নাইডু'র সম্পদের পরিমাণ ৯৩১ কোটি রুপিরও বেশি। 

অন্যদিকে, হাতেগোনা কয়েকজন মন্ত্রী হলফনামায় খুবই সামান্য সম্পদের কথা উল্লেখ করেছেন। ত্রিপুরার আদিবাসী গণফ্রন্টের শুক্লচরণ নোয়াতিয়া মাত্র ২ লাখ রুপির সম্পদ ঘোষণা করেছেন, অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেসের মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার সম্পদের পরিমাণ ৩ লাখ রুপির কিছু বেশি।


abc